কুষ্টিয়ায় নাবালিকা ছাত্রীকে বিয়ে করে আলোচনায় কলেজ শিক্ষক!
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি ,ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মহিলা কলেজের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপনন বিভাগের প্রভাষক তুহিনুর রহমানের বিরুদ্ধে একই কলেজের মানবিক বিভাগের ২ য় বর্ষের নাবালিকা ছাত্রীকে বিয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে তুহিনুর রহমান একই কলেজের মানবিক বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী সানজিদা আক্তার চৈতিকে আলাউদ্দিন নগরের সততা হোটেলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। এসময় স্বাক্ষী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আলিমুজ্জান ও ডাঃ এটিএম আতাউর রহমান এবং বরের উকিল ছিলেন আাশাদুর, বরের উকিল নিয়োগের ব্যাপারে স্বাক্ষী রাজু আহমেদ, কন্যার উকিল নিয়োগের ব্যাপারে স্বাক্ষী মোঃ সমাপ্ত মল্লিক ও যে ব্যক্তির দ্বারা বিয়ে পড়ানো হয়েছে সেই স্বাক্ষী ছিলেন আব্দুল মালেক। বিয়ের কাজী ছিলেন ফিরোজ এবং কবুল পড়ান আলাউদ্দিন নগর বাজার মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেক।
সম্প্রতি বিলুপ্ত প্রায় বাগদি সম্প্রদায়ের জমি দখলকে কেন্দ্র করে তুহিনুর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের মধ্যে উঠে আসে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রীকে বিয়ের বিষয়টি। একজন প্রভাষক কিভাবে তার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রীকে বিয়ে করে বাল্য বিয়ের মতো অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে জড়িত হতে পারে এ বিষয়টি অভিভাবক মহলের মনে প্রচন্ড নাড়া দিয়েছে।
বাল্যবিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে মহিলা কলেজের সভাপতি এ্যাডঃ জাহাঙ্গীর আলম গালিব উক্ত কলেজের প্রিন্সিপাল তরিকুল ইসলামকে নির্দেশ দেন বাল্যবিয়ের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। তার প্রেক্ষিতে শাজাহান আলী প্রভাষক ইসলামের ইতিহাস, আবু নাঈম মোঃ ইয়াসিন আলী ইসলাম শিক্ষা বিভাগ এবং মনিরুল ইসলাম ইংরেজি বিভাগকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবার নির্দেশ দেন।
তদন্ত কমিটি কোনরুপ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ না করে তাদের সহকর্মীকে বাঁচাতে ঢালাও ভাবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তাতে উল্লেখ করেন বাল্যবিয়ে সংক্রান্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি এবং ঈদের পর (কোন ঈদ সেটা উল্লেখ নাই) উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হবে।
এবিষয়ে ইংরেজি শিক্ষককে তদন্ত কমিটিতে থেকে মিথ্যা প্রতিবেদন জমাদানের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে জানান তিনি সরেজমিন তদন্তে যান নাই শাজাহান আলী গিয়েছিলেন এবং শাজাহান আলী তাকে প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে বলেছেন তাই তিনি করেছেন। কেন তিনি সরেজমিনে না গিয়ে বাল্যবিয়ের মতো একটি গর্হিত কাজে সহযোগিতা করেছেন প্রশ্নে তিনি বলেন ভুল হয়ে গেছে আমি ক্ষমা প্রার্থী।
এ বিষয়ে শাজাহান আলী কেন মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়ে বাল্যবিয়েতে সহযোগীতা করেছেন এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন আমরা মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম মেয়ের বাবা ও মা আমাদের যা বলেছে সেই কথার উপর ভিত্তি করে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর নিকট কেন জিজ্ঞাসা করেন নাই এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেন নাই।
মানবিক বিভাগের ২ বর্ষের ছাত্রী সানজিদা আক্তার চৈতির সার্টিফিকেট অনুযায়ী জম্ম সাল ২/১২/২০০৩। মানুষ পড়ার কারিগড় একজন শিক্ষকের নিকট তার ছাত্র বা ছাত্রী সন্তান তুল্য। অভিবাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুল অথবা কলেজে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকেন। কিন্তু শিক্ষক দ্বারা এমন অপকর্ম সংঘটিত হলে নিরাপত্তার জায়গা কোথায়?